অনুচ্ছেদ রচনা : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে তার প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়ছিল যে বোধ বা চেতনাকে কেন্দ্র করে তারই নাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে যে স্বাধীনতা তাকে চিরসমুন্নত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের প্রেরণা জোগাবে চিরদিন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করলেও প্রকৃত মুক্তি আসেনি বাঙালি জাতির। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট, ৫৮ সালে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন। সর্বোপরি ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করে। তখনই স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের বর্বরতা চালায় দেশ জুড়ে। তখন বাংলার জনতা পাকিস্তানিদের আক্রমণ রুখে দেয়। দীর্ঘ নয় মাস ধরে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধ চলে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। ৩০ লক্ষ শহিদের প্রাণের এবং ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের চেতনা। একে ভূলুণ্ঠিত করা যাবে না।