অনুচ্ছেদ রচনা : কোভিড-১৯
কোভিড-১৯
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে নভেল করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হয়, যা খুব দ্রুত চীনের অন্যান্য শহর ও বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিগত তিন বছর ধরে বিশ্ব পরিসরে দাপিয়ে বেড়ানো মূর্ত এই আতঙ্কের নামই করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯। ৭ জানুয়ারি ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের সপ্তম প্রজাতির নামকরণ করেন করোনা ভাইরাস। আর এর মাধ্যমে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করা হয়, 2019 Novel Corona Virus (2019-n CoV)। এরপর International Committee on Taxonomy of Viruses (ICTV) করোনা ভাইরাসের এ প্রজাতিকে নথিভুক্ত করে Severe Acute Respiratory Syndrome Coronavirus 2 (SARS-CoV2) নামে পরবর্তীতে WHO ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ SARS-CoV-2 সংক্রমণে ফ্লু'র মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হয়, তার নামকরণ করেন COVID-19। এ নামের CO দিয়ে Corona, VI দিয়ে Virus ও D দিয়ে Disease (রোগ) বোঝানো হয়। আর ভাইরাস ছড়ানোর সময় হিসেবে ২০১৯ সালকে চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়-19 ।
৮ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয় তিনজন COVID-19 এ আক্রান্ত রোগী। আর ১৮ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশে প্রথম এ রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে । স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ এ মহাবিপর্যয়ে বিশ্ব আর্থ-সামাজিক অবস্থা যেমন ওলট-পালট হয়ে গিয়েছিল তেমনি মানবসভ্যতাও পড়েছিল অস্তিত্বের হুমকিতে। বৈশ্বিক করোনা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী করোনা টিকা আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীতে কমতে থাকে মরণব্যাধি এ ভাইরাসের প্রকোপ। এক্ষেত্রে WHO কর্তৃক প্রথম স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার- বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন, রাশিয়ার উদ্ভাবিত Sputnik-V ভ্যাকসিন, চীনের Corona Vac ভ্যাকসিন ইত্যাদি অন্যতম ।
COVID-19-এর ভ্যাকসিনের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের উদ্যোগে গঠিত হয় COVAX জোট, যেখানে বিশ্বের ১৮৪টি দেশ যোগ দিয়েছে। সর্বোপরি, বৈশ্বিক সমন্বিত প্রয়াসে ২০২২ সালের শুরু থেকেই বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাব অনেকটা কমতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে ২০২২ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেশের ১২ কোটি ১৪ লাখ মানুষকে করোনার প্রথম ডোজ, ১১ কোটি ৯৬ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ এবং ২ কোটি ৯৬ লাখ মানুষকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত ধরন পরিবর্তনকারী করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে টিকা গ্রহণের পাশাপাশি নিজেদের স্বাস্থ্যসচেতন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই ।