তোমার কলেজের ডিগ্রি পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে একটি মানপত্র রচনা কর

তোমার কলেজের ডিগ্রি পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে একটি মানপত্র রচনা কর

তোমার কলেজের ডিগ্রি পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে একটি মানপত্র রচনা কর।

পাবনা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষ্যে আহত বচন :

হে বিদায়ি ভাই-বোনরা !

“ বিদায়! বিদায়! আকাশে বাতাসে একি হাহাকার!
বিষাদের বাঁশি বাজিতেছে ঐ থেকে থেকে বারবার ! 
বেয়ে আঁখি কোণ ঝরিছে সবার অবিরাম অশ্রুধারা। 

পত্রপল্লবে পুষ্পিত সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি যখন বয়ে নিয়ে এসেছে নববর্ষের আগমনী বার্তা, তখনই নিষ্ঠুর পৃথিবীর অমোঘ বিধানে ভেসে আসছে বিদায়ের এ আহতবার্তা। মায়ার-বন্ধনে বিজড়িত অব্যক্ত আবেগানুরাগের মূর্ছনায় বিমোহিত সববন্ধন ছিন্ন করে তোমরা আজ কলেজের এ পরিচিত অঙ্গন ছেড়ে চলে যাচ্ছো পৌঁছাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। সফলতার উজ্জ্বল সোপানে এগিয়ে যাবে এ প্রত্যাশায়ই বিদায়বেদন। বেহাগের মাঝেও আমরা আনন্দিত ও আবেগপ্লুত। প্রত্যাশিত যাত্রাপথের সুন্দর আগামীতে প্রজ্বলিত হোক তোমাদের জ্ঞানপ্রদীপ । আশীবাণী গ্রহণ করো আমাদের; গ্রহণ করো আমাদের বেদনাবিধূর হৃদয়েরবার্তা ও প্রাণঢালা বিদায়ি অভিনন্দন 

হে বিদায়ি বন্ধুরা !

“ ভুবনের ঘাটে ঘাটে
এক হাটে লও বোঝা 
শূন্য করে দাও অন্য হাটে।”

যে পথ একদিন তোমাদের নিয়ে এসেছিল এই কলেজের অঙ্গনে সে পথই আবার তোমাদের দিয়েছে ডাক। একদিকে চলার নেশা আর একদিকে পিছুটান। বেহাগ রাগিনীতে বাজছে বিদায়ের সুর। সে সুর এখন মূর্ছিত হচ্ছে এই কলেজের অঙ্গনে, মূর্ছিত হচ্ছে প্রতিটি প্রাণে ।

হে আলোর দিশারি !

তোমরা চলেছো উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুভ আহ্বানে সাড়া দিতে। সামনে তোমাদের নবনব জ্ঞানলোকে উদ্ভাসিত হওয়ার উদাত্ত আহ্বান, তোমরা নবীন-প্রভাতে নব আশার জ্যোতি; তাই তোমাদের যাত্রাপথে রইল আমাদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। দেশ ও দশের মুখোজ্জ্বল করে তোমরা ধন্য হও। ধন্যহোক তোমাদের আদর্শ মানুষ গড়ার এই অনুপম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভবিষ্যতের কুসুমাস্তীর্ণ জীবনের শুভ কামনাই আমাদের অবুঝ মনের বিদায় অভিনন্দন ।

হে ব্যথাতুর প্রাণ !

একসাথে পথ চলতে গিয়ে হয়তোবা কখনো মনের অজান্তে ভুলে গিয়েছিলাম ছোট-বড় ব্যবধান। কোন দুর্বল মুহূর্তে কথা ও কাজ দিয়ে তোমাদের কতই না যাতনা দিয়েছি । আজ যাবার বেলায় ব্যথিত হৃদয় চাই ক্ষমা; ক্ষমা কর তোমরা । তোমাদের ক্ষমা-সুন্দর আকাশের মত উদার হৃদয়ের সাথে হৃদয় মিলিয়ে হাতে হাত রেখে জগতের অসম্ভব সুন্দরকে একই পথে ছুঁয়ে-ছুঁয়ে রাঙিয়ে দেব বিশ্বকানন । 

হে আলোর পথের তীর্থযাত্রী !

অশান্তির দাবানলে দাউ-দাউ করে জ্বলে উঠা অশান্ত পৃথিবীর অন্যায়-অজ্ঞতার নাগপাশ ছিন্ন করে আদর্শ মানুষ গড়ার কারিগর এ “মডেল পরিবারের” অধ্যক্ষ, শিক্ষকমণ্ডলীর অফুরন্ত আশার দীপাবলিতে শুরু হয়েছিল তোমাদের নতুন যাত্রা। জীবনের জন্য ছায়া- সুশীতল পরিবেশ যে কত অমূল্য, সান্নিধ্যের অন্তরাগে আরো গভীরভাবে আমরা এ বিদায়ক্ষণে বুঝতে পারছি। শিক্ষকমণ্ডলীর স্বর্গীয়বন্ধন থেকে তোমাদের বিদায় জানিয়ে জোছনার রূপালিপাটে অবগাহন করার কোন অভিলাষ নেই, আছে গাঢ় অমাবস্যা। ব্যথিত প্রাণের একান্ত আকুতি মহিলোকে মন্দ্রিত হয়ে উঠক তোমাদের বিজয় উল্লাস ৷

হে বিদায় সাথীরা !

“হাসি দিয়ে যদি লুকালে তোমার সারা জীবনের বেদনা,
আজও তবে হেসে যাও, আজ বিদায়ের দিনে কেঁদোনা।”

বিদায়ের অন্তিমলগ্নে ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকের মহামিলনের এপবিত্র ভূমিতে দাঁড়িয়ে তোমাদের করুণ মুখপানে তাকিয়ে ভাব আজ রুদ্ধ, কলমের গতি শ্লথ, আমাদের হৃদয়াকাশ আজ অশ্রুসিক্ত।

হে বিদায়ি পথের পথিক !

তোমরা ছিলে কলেজের নট। স্বজনদের আশার প্রতীক, আমাদের অহঙ্কার। তোমাদের ফলাফলের উপরেই নির্ভর করছে আমাদের সফলতা। তোমাদের কল্যাণে পরম করুণাময়ের কাছে এ মিনতি, ‘হে প্রভু আমাদের প্রত্যাশা পূরণ কর। বন্ধুদের যাত্রাপথ সুন্দর কর, তুমি তাদের সহায় থেকো'-আমিন।

তারিখ : ২০ জুন ২০২৪ খ্রিঃ

তোমাদের কল্যাণকামী        
পাবনা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের
প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ      
ডিগ্রি বাংলা (আবশ্যিক) – ৩৭ (খ)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url