বাংলা রচনা : আমার প্রিয় শখ
(এই রচনাটি পঞ্চম শ্রেণীর উপযোগী করে রচিত।)
[ রচনা সংকেত: ভূমিকা; বিভিন্ন ধরনের শখ; শখের কাজের প্রয়োজনীয়তা; আমার শখ; বিদ্যালয়ের আঙিনায় বাগান; উপসংহার ]
ভূমিকা : ‘শখ' শব্দের আভিধানিক অর্থ আগ্রহ বা ঝোঁক। শখ হচ্ছে একজন মানুষের প্রিয় কাজ যা, সে তার অবসর সময়টুকুতে আনন্দ লাভের জন্য করে থাকে। আর এ আনন্দ লাভের জন্য যে বিশেষ ধরনের কাজ করে থাকে, তাকে শখের কাজ বলা হয়।
বিভিন্ন ধরনের শখ : সব মানুষের রুচি ও অভ্যাস একরকম নয়। তাই ব্যক্তিভেদে শখের কাজও নানা রকম হয়ে থাকে। কেউ শখ করে ডাকটিকিট সংগ্রহ করে, কেউ ছবি আঁকে, কেউ বাগান করে, কেউ ঘুড়ি উড়ায়, আবার কেউবা পত্রমিতালি করে। তবে এসব শখের কাজ অবসর সময়েই হয় ।
শখের কাজের প্রয়োজনীয়তা : প্রতিটি মানুষের জীবনেই অবসর যাপন ও আনন্দ উপভোগ করা প্রয়োজন। আর সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাওয়া যায় শখের কাজ করার মধ্য দিয়ে। শখের কাজ মানুষকে আলাদা আনন্দ ও উৎসাহ দেয়। কর্মব্যস্ত জীবনের মাঝে আনন্দ-উৎসাহের প্রয়োজনেই মানুষ এক বা একাধিক শখের কাজ করে থাকে। শখের কাজ করতে গিয়ে অনেকেই নতুন নতুন অনেক কিছু আবিষ্কার করেছেন, কেউবা অমর হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায়।
আমার শখ : আমি পঞ্চম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। আমার শখ বাগান করা। তাই আমি আমার পড়ার ঘরের সামনে একটুখানি খালি জায়গায় ফুলের বাগান করেছি। বাগানটি বেশ মনোরম। আমি নিজের হাতে অতি যত্নসহকারে বাগানের পরিচর্যা করি। নার্সারি থেকে নানা জাতের ফুলের চারা এনে লাগাই। বাগানের চারপাশে আমি বাঁশ দিয়ে শক্ত করে বেড়া দিয়েছি। প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমি বাগানে যাই বাগানে পানি দিই এবং মাঝে মাঝে গাছের পরিচর্যায় গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিই। বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে এসে পুনরায় বাগানে কাজ করি। আমার বাগানের প্রধান আকর্ষণ গোলাপ ফুল। টুকটুকে লাল, ফিকে লাল, সাদা প্রভৃতি নানা রঙের গোলাপ ফুল আছে আমার বাগানে। আমার বাগানে অন্যান্য ফুলের মধ্যে রয়েছে গন্ধরাজ, শেফালি, বেলী, টগর ও করবী ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে নানা জাতের মৌসুমি ফুল, যেমন— গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, রজনীগন্ধা ইত্যাদি। আমি প্রতিবছরই নতুন নতুন ফুলের আবাদ করে থাকি।
বিদ্যালয়ের আঙিনায় বাগান : আমার শখ যেহেতু বাগান করা তাই আমি যেখানেই সুযোগ পাই সেখানেই বাগান করার চেষ্টা করি। আর এই কারণেই আমি আমার বিদ্যালয়ের আঙিনায় নানান কাজ করে থাকি। আমাদের বিদ্যালয়ের আঙিনায় আমরা একটা সুন্দর বাগান করেছি। এ বাগানে নানা ধরনের ফুলে মধ্যে রয়েছে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গন্ধরাজ, শেফালি, বেলি ইত্যাদি। এ বাগানটি আমাদের বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি যখন ফুটন্ত ফুলসমৃদ্ধ বাগানের দিকে তাকাই তখন আমার মন আনন্দে ভরে ওঠে। তাই আমি যখনই সময় পাই তখন একাকী বা অন্যদের সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ের আঙিনা বাগানের পরিচর্যা করি।
উপসংহার : বাগান করার মতো এত সুন্দর শঙ্খ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। প্রতিটি গাছে যখন ফুল ফোটে এবং মৃদুমন্দ বাতাসে যখন ফুলগাছগুলো মাথা দোলায় তখন এক স্বর্গীয় আনন্দে আমার মন ভরে যায় ।