অনুচ্ছেদ রচনা : বিশ্বায়ন

বিশ্বায়ন

বিশ্বায়ন 

মার্শাল ম্যাকলােহনের মতে ‘গ্লোবাল ভিলেজ' এর অন্য একটি রূপই হচ্ছে বিশ্বায়ন। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে বিশ্ব ব্যবস্থায় পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সারা পথিবীতে সবচেয়ে আলােচিত বিষয় বিশ্বায়ন। ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ বলতে বােঝায়, সারাবিশ্ব যেন এখন একটি গ্রাম। বিশ্বায়ন এমন একটি প্রক্রিয়া, যা রাষ্ট্র ও সম্প্রদায়ের পুরনাে কাঠামাে ও সীমানা অবলুপ্ত করেছে। বিশ্বায়নকে বলা হচ্ছে একটি সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের ক্রমবর্ধমান পরাজাতীয়করণ। যার ফলে এক বিশ্ব সীমানা ও এক বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটেছে। অর্থনৈতিক লেনদেন, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও রাজনৈতিক যােগাযােগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সীমানার প্রাচীর ভেঙে বিশ্বায়ন বহুবিধ পরিবর্তন নিয়ে এলো। জনগণের ধ্যান-ধারণা ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে একটি বৈশ্বিক অবকাঠামাের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বতর্মানে যে বিশ্বায়নের কথা বলা হচ্ছে তার মাধ্যমে সম্পদশালী সমৃদ্ধ দেশগুলাে তুতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলাের ওপর অর্থনৈতিক নয়া উপনিবেশবাদ প্রতিষ্ঠা করে পুঁজিবাদের হাতকে শক্তিশালী করতে চায়। উন্নত দেশগুলাে অনুন্নত দেশসমূহের অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক দুর্বলতার সুযােগ গ্রহণ করছে। কোনাে উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে সম্পদশালী রাষ্ট্রকে উপেক্ষা করা সভব নয়। আমাদের বাংলাদেশ যেহেতু একটি উন্নয়নশীল দেশ, আমাদের পক্ষেও কোনাে উন্নত দেশকে উপেক্ষা করার সুযােগ নেই। তবে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সব দিক থেকে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতাে উপযুক্ত করে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে বিশ্বায়নের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমরা নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে পারব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url