অনুচ্ছেদ রচনা : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার বাংলাদেশের বিখ্যাত স্বাস্থ্যকর স্থান। পর্যটননগরী হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এখানকার অনেক কিছুই সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান ও বস্তুগুলাের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে আছে সমুদ্রসৈকত। এ সমুদ্রসৈকত শুধু বাংলাদেশেই নয়, এটি সারা পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুময় সমুদ্রসৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১৫৫ কিলােমিটার। বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষে কক্সবাজার জেলায় এ সমুদ্রসৈকত অবস্থিত। কেবল বাংলাদেশের নয়, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। এ সমুদ্রসৈকত দেখতে খুবই সুন্দর। সবচেয়ে মনােরম শেষ বিকেলের সৈকত। সূর্যাস্তের দৃশ্য অত্যন্ত মনােমুগ্ধকর। সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাশি লালচে আভায় ছেয়ে যায। ঢেউয়ের পর ঢেউ খুব শান্তভাবে একটি আরেকটির গায়ে আছড়ে পড়ে। সমুদ্র যেন আবিরের রঙে নেয়ে ওঠে। ছােট ছেলেমেয়েরা সৈকতে ছােটাছুটি করে-আর শামুক ও ঝিনুক কুড়ায়। বিস্তৃত সাগর বেলায় লক্ষ লক্ষ লাল কাঁকড়ার আনাগােনা চলে। একসময় সূর্য পাটে চলে যায়। রােদের আঁচ কমতে কমতে তা চাঁদের আলাের মতাে সিদ্ধ হয়ে ওঠে। রঙিন বলের মতাে সূর্য ধীরে ধীরে সাগর জলে ডুবে যায়। কী অপরূপ সে দৃশ্য!। এ দৃশ্য দেখে শুধু অনুভব করা যায়, ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এরপর মেঘমুক্ত আকাশে হাজার তারার মেলা বসে চাঁদের আলােয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সমুদ্রসৈকত। সমুদ্রসৈকতের আরও অনেক রূপ। সৈকতের পাশেই হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে আছে অনেক দোকান। এখানে ঝিনুক ও পুঁতির মালাসহ নানা রকমের জিনিস পাওয়া যায়। সৈকতের পাশে আরও আছে ঝাউবন। সারি সারি ঝাউ গাছ দেখতে অপূর্ব। সাগরের গর্জন , বিস্তীর্ণ জল, ঢেউয়ের পর ঢেউ আর দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ দেখে। মানুষ মুগ্ধ হয়। আকাশ আর সাগরের বিশালতা সমুদ্রসৈকতে গেলে স্পষ্ট দেখা যায়। সমুদ্রসৈকতের একদিকে অথৈ জল, পেছনে পাহাড় আর দুপাশে বালি আর বালি। শীতকালে লক্ষ লক্ষ পর্যটক সমুদ্রসৈকত দেখতে আসে। এসব মিলে। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পর্যটন শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। এটি আমাদের ঐতিহ্য। এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে প্রচুর। সরকার ও জনগণকে এর রক্ষণাবেক্ষণে এগিয়ে আসা উচিত।