এসএসসি পরীক্ষার পর অবসর দিনগুলো কীভাবে কাটাবে তা জানিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র
এসএসসি পরীক্ষার পর অবসর দিনগুলো কীভাবে কাটাবে তা জানিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র ।
প্রিয় মুকুল,
শুভেচ্ছা নিস। অনেকদিন পর তাের চিঠি পেলাম। চিঠিতে তুই জানতে চেয়েছিস, আসন্ন পরীক্ষার পর কী করব? কেন, তাের কোনাে পরিকল্পনা আছে নাকি? সিঙ্গাপুর, কলকাতা, কাঠমান্ডু কিংবা কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকতে আনন্দভ্রমণে যাবার প্ল্যান? আসলে পরীক্ষার পর তিনমাস সময়টা যে খুব দীর্ঘ তা নয়। দেখতে দেখতে হয়তাে কেটে যাবে। তবে আমি এই সময়টা কাজে লাগাতে চাই। নিরর্থক আনন্দভ্রমণের চেয়ে আমি বরং সময়টাকে অর্থময় করে তুলতে চাই।
প্রথমে আমার ইচ্ছে, পরীক্ষার পর কিছুদিন আমি গ্রামের বাড়িতে কাটাব। সেখানে আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আমরা গ্রামের বন্ধুরা মিলে ১০০০টি ফলজ, বনজ বৃক্ষের চারা রােপণ করব। গাছগুলাে চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে আমাদের গ্রামের যে নতুন রাস্তাটা আছে, তার দুপাশে লাগাব। কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে থাকাও হবে, বন্ধুদের নিয়ে গ্রামের জন্য কিছু করতে পারলে ভালাে লাগবে। আমাদের দেশে যে হারে বৃক্ষনিধন চলছে, তাতে পরিবেশ বিপর্যয় অত্যাসন্ন।
তারপর ঢাকায় আমার বড়মামার বাসায় কিছুদিন বেড়াব । ঢাকায় বেশকিছু দর্শনীয় স্থান আমার দেখা হয়নি। মামা-মামি কতবার যেতে বলেছেন। কিন্তু পড়াশােনার জন্যে এতদিন যাওয়া হয়নি। ভাবছি মামার বাসায় বেড়ানাে হবে, দর্শনীয় স্থানও দেখা হবে। আপাতত পরিকল্পনা হচ্ছে, ঢাকার রায়েরবাজারে অবস্থিত শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, লালবাগ কেল্লা ও আহসান মঞ্জিল দেখা। সম্ভব হলে ঈশা খাঁর সােনারগাঁ পরিদর্শন করব।
তুই তাে জানিস, আমার বড়মামা একজন বীর মুক্তিযােদ্ধা ছিলেন। আমার মেঝমামাকে পাকিস্তানি আর্মিরা গুলি করে হত্যা করেছে। এসব আমার জন্মেরও আগের কথা। মায়ের মুখে মেজমামার নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা শুনতে শুনতে মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা ও ভালােবাসা জন্মে গেছে। তাই প্রথমে রায়েরবাজারের বধ্যভূমি এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধ দেখতে যাব। তারপর অন্যান্য জায়গা। মােটামুটি এই আমার পরিকল্পনা। ইচ্ছে করলে তুইও আমার সঙ্গে যােগ দিতে পারিস।
আমার পরিকল্পনা তাে জানালাম। এবার তাের অবসর কাটানাের পরিকল্পনা লিখে জানা। চাচা ও চাচিকে আমার সালাম দিস। তাের সুন্দর, বিকশিত জীবন কামনা করে আজকের মতাে শেষ করছি।
হুম