অনুচ্ছেদ রচনা : গ্রামীণ জীবনের সুখ-দুঃখ

গ্রামীণ জীবনের সুখ-দুঃখ

গ্রামীণ জীবনের সুখ-দুঃখ

গ্রামই বাংলাদেশের প্রাণ। শহর-বন্দর যা কিছু আছে, তা দাঁড়িয়ে আছে কৃষিনির্ভর আটষট্টি হাজার গ্রামকে ভিত্তি করে। গ্রামীণ সমাজ জোটবদ্ধ সমাজ। এ সমাজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সবই একসাথে হয়ে থাকে। কেউ বিপদে পড়লে অন্যরা তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। বিয়ে-শাদি, উৎসবআয়ােজনেও সবাই সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করে।

বাংলাদেশের গ্রামগুলাে অতীতকালে ঐশ্বর্যমণ্ডিত ছিল। এক কথায় তাকে বলা হতাে সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলা। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি ছিল। পারিবারিক ও আত্মীয়তার সূত্রে আবদ্ধ হয়ে গ্রামের মানুষ এক-একটি অঞ্চলে বসতি গড়েছিল। জনসংখ্যাও এত বেশি ছিল না। অভাব-অনটন, হাহাকার এতটা প্রকট ছিল না। মােটামুটি সচ্ছল, সুখী ছিল গ্রামের মানুষ। বর্তমানে গ্রামের সেই অবস্থা আর নেই।

জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপে ভেঙে গেছে গ্রামের সেই ঐতিহ্যময় সুখী পারিবারিক জীবন। সেখানে সেই সম্প্রীতি আর নেই। শিক্ষিত গ্রামের ছেলেটি পড়ালেখা শেষ করে চাকরি পাওয়ার পর পরিবার নিয়ে আর গ্রামে থাকছে না। ফলে আগের মতােই অশিক্ষিত বা স্বল্প-শিক্ষিতরাই গ্রামে থাকছে। ভেঙে পড়া পথ-ঘাট, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অশিক্ষা, অচিকিৎসা, আর অন্ধকার—এ সবই জগদ্দল পাথরের মতাে গ্রামীণ জীবনের দুঃখ হয়ে চেপে বসে আছে আজো।

আটষট্টি হাজার গ্রাম বাঁচলে দেশ বাঁচবে—এ কথা অতীব সত্য। সুতরাং গ্রামকে অবহেলা করে কখনাে দেশকে উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। গ্রামীণ জীবনে যেমন সুখকর অনেক সংস্কৃতি আছে, তেমনি অনেক কুসংস্কার, কু-প্রথা চালু রয়েছে। তাই বলা যায় গ্রামীণ জীবনে সুখ-দুঃখ দু-ই বিরাজমান।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url