অনুচ্ছেদ রচনা : জনসেবা
জনসেবা
সেবা মানবচরিত্রের এক মহৎ গুণ। আর্তজনের সেবার মধ্য দিয়ে স্রষ্টাকে পাওয়া যায়। অন্যের কল্যাণে আত্মত্যাগের মহান ব্রতের নামই জনসেবা। পৃথিবীর প্রত্যেকটি ধর্মেই মানবসেবার কথা বলা হয়েছে। যীশুখ্রিষ্ট, গৌতমবুদ্ধ, হযরত মুহম্মদ (স:) প্রমুখ মনীষী জীবনে জনসেবার অজস্র উদাহরণ রেখে গেছেন।
নানাভাবে জনসেবা করা যায়। অর্থ দিয়ে, খাদ্য দিয়ে, শুশ্রুষা করে, দুর্বলের পাশে সবল হয়ে দাঁড়িয়ে, বস্ত্রহীনকে বত্র দিয়ে, জনকল্যাণে পথ, ঘাট, প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেও জনসেবা করা যায়। তবে জনসেবার প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নিঃস্বার্থ। কোনাে উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য জনসেবা করা উচিত নয়। সমাজজীবনে চলতে গেলে একে অপরকে সাহায্য করতে হয়। পারস্পরিক সাহায্য ছাড়া কেউ চলতে পারে । বিপদে-আপদে, প্রয়ােজনে পাশে এসে দাঁড়ানােই হচ্ছে মনুষ্যত্বের মহান দায়িত্ব। এজন্য কবি বলেছেনー
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।'
কোনাে নাম-যশের আশায় নয়, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের উপকার করাই প্রকৃত জনসেবা।
জনসেবা একটি মহৎ কাজ। মহৎ হৃদয়ের মানুষই কেবল জনসেবা করতে পারে। কোনাে প্রতিদানের আশায় নয়, অপরের প্রয়ােজনে যে আত্মােৎসর্গ করতে পারে সে-ই মহৎ মানুষ। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অনেক মহৎ হৃদয়ের মানুষ আছেন, যারা মানবকল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে অমর হয়ে রয়েছেন।
জনসেবা মানুষের এক মহৎ হৃদয়বৃত্তি, অনন্য মানবধর্ম। উদার মনের মানুষ জনসেবার মাধ্যমে অনাবিল সুখ ও শান্তি খুঁজে পায়। কথায় বলে অন্যের জীবন বাঁচাবার জন্য যে জীবন দিতে পারে, বাঁচার অধিকার একমাত্র তারই আছে।