অনুচ্ছেদ রচনা : বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ


বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ

জীবন-সগ্রামী মানুষ প্রতিকূল পরিবেশকে জয় করেই গড়ে তুলেছে সভ্যতার সৌধ। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। এদেশের মানুষও নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মােকাবেলা করে বেঁচে আছে। বিপুল প্রাণের ক্ষয়, ফসলের ক্ষতি, সম্পদের হানি—সবকিছুর পরও মানুষ বেঁচে থাকে। নতুন করে গড়ে তােলে বাড়িঘর, জীবনের প্রবাহ। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের স্বরূপ : ঝড়-জলােচ্ছ্বাস, কখনাে ভয়াবহ বন্যা, কখনাে-বা খরা এ দেশের মানুষের নিত্যসঙ্গী। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সাইক্লোন ও জলােচ্ছ্বাসে প্রায় কয়েক লক্ষ লােকের মৃত্যু হয়। ১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সমুদ্রোপকূলে প্রাণ হারায় প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ। ১৯৮৮ সালের বন্যায় প্রায় এক কোটি লোেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৭ সালে দেশের মধ্য-অঞ্চলের বন্যায় ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সােয়া কোটি মানুষ। খেতের ফসল, বাড়িঘর, গবাদি পশু, গাছপালা, সবই ধ্বংস হয়ে যায়। ভেঙে পড়ে দেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরােধ করার শক্তি মানুষের হাতে নেই। তবে দুর্যোগ মােকাবেলা করার প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অনেক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এ জন্য গণসচেতনতা দরকার, দরকার ঝড়-জলােচ্ছ্বাস ও বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতাে অবকাঠামাে নির্মাণ, উঁচু বাঁধ তৈরি। রাষ্ট্রীয় সুপরিকল্পনার মাধ্যমে জনস্বার্থে প্রয়ােজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র, সবুজ বেষ্টনী ইত্যাদি তৈরি করা যেতে পারে।

আমাদের দেশ ভৌগােলিক দিক থেকে অধিক দুর্যোগপ্রবণ। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মােকাবেলা করার জন্য রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা যেমন থাকা দরকার তেমনি জনসচেতনতারও প্রয়ােজন। প্রয়ােজন দুর্যোগ মােকাবেলা করার মতাে অবকাঠামােগত উন্নয়ন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url