তােমার এলাকার একটি লােকজ উৎসবের বর্ণনা দিয়ে প্রবাসী বন্ধুকে পত্র লিখ
✱তােমার এলাকার একটি লােকজ উৎসবের বর্ণনা দিয়ে প্রবাসী বন্ধুকে পত্র লিখ।
প্রিয় পুতুল,
আমার প্রীতি ও ভালােবাসা নাও। আজ প্রায় দুই বছর হতে চলল তুমি রাশিয়া চলে গেছ। আমাদের দুজনের জীবন যে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর ছিল, তা কিছুতেই ভুলতে পারি না। তুমি তােমার বাবা-মার সঙ্গে রাশিয়া চলে যাওয়ার পর এখনাে আমাদের এলাকার নানা অনুষ্ঠান সেই আগের মতােই আমরা উপভােগ করি। তবে আমরা তােমার অভাব বােধ করি। এবার আমাদের এলাকায় বেশ বড় আয়ােজনে বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আমি সেই উৎসবের কথা বলতেই তােমাকে চিঠি লিখছি।
তুমি তাে জান, আমাদের সারা বাংলাদেশেই পহেলা বৈশাখ নববর্ষ হিসেবে পালিত হয়। এখন আমাদের রাঙ্গুনিয়াতেও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ব্যাপক আয়ােজনে নানা অনুষ্ঠান হয়। রাজানগরে এবারই প্রথম বৈশাখী উৎসবের অনুষ্ঠান হয়। স্বপন, পুলক, হ্যাপী, চৈতালী, অনিক, দীপা, কুমকুম, নাহার, রাজু, সজল এবং আমি সবাই মিলে সকাল সকাল আমাদের বিদ্যাময়ী স্কুলের মাঠে চলে যাই। প্রথমে ওখান থেকে সকাল সাতটায় শুরু হয় বৈশাখী শােভাযাত্রা। নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুন হাতে আমরা র্যালিতে অংশ নিই। র্যালি শেষ করে স্কুলের মাঠে চলে আসি। ওখানেই বিশাল আকারে মেলা বসেছে। মাঠের উত্তর দিকে চড়কগাছের আয়ােজন, তার পাশে বসেছে চুড়ির দোকান। ছােট ছােট বাক্সে নানা ধরনের চুড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছে মহিলারা। তার পাশে চানাচুর ও নিমকি ভাজা ও বিক্রি চলছে। আমি গরম নিমকিভাজা আধা কেজি কিনে সবাই মিলে খেয়েছি আর ঘুরে ঘুরে মেলাটা দেখেছি। মাঠের পূর্ব কোণে বাঁশ-বেতের নানা গৃহস্থালি দ্রব্য নিয়ে বসেছে বিক্রেতারা। ওখানেও বেশ ভিড়। তার পাশেই নানা ধরনের বেলুন, বাঁশির পসরা বসেছে। আমি আমার ছােট বােন প্রিয়ন্তির জন্য বেলুন ও বাঁশি কিনেছি। ওর জন্য রঙিন ফিতাও কিনেছি। দীপা তাে যেটা দেখে সেটাই কেনে এমন অবস্থা ওর। হাতে যে কয়টা টাকা ছিল, সব টাকায় দীপা ওর ভাই-বােনের জন্য নানা জিনিসপত্র কিনেছিল। রাজু, সজল, হ্যাপী, অনিক, স্বপন বাঁশের তৈরি কলমদানি কিনেছিল। আমরা সবাই মিলে চড়কগাছেও উঠলাম। ওখানে উঠে তাে চৈতালী ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু কি আর করা,দশপাক না খেয়ে তাে আর নামা যাবে না। চৈতালী বলেছে, ও আর কখনাে চড়কগাছে উঠবে না।
আজ আর লিখছি না। তুমি ভালাে থেকো। জ্যাঠা-জেঠিমাকে শ্রদ্ধা দিও। তােমার সব খবর জানিয়ে আমাকে লিখাে। তােমার জন্য অসীম ভালােবাসা রইল।