তােমার অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা দিয়ে প্রবাসী বন্ধুর কাছে একটি পত্র লেখ
✱তোমার অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা দিয়ে প্রবাসী বন্ধুর কাছে একটি পত্র লেখ।
অথবা, বাংলাদেশের বিগত বন্যার ফল জানিয়ে তােমার কোনাে প্রবাসী বন্ধুর নিকট একখানা পত্র লেখ।
প্রিয় কিরণ
আমার শুভেচ্ছা নিও। আশা করি, তুমি ভালাে আছ। এলাকায় বন্যার কারণে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করে আমাদের ভালাে থাকার কোনাে উপায় নেই। তােমাকে এ সম্পর্কে জানানাের উদ্দেশ্যেই লিখতে বসেছি।
বর্ষাকাল শুরু হয়েছে মাত্র কিছুদিন আগে। এরই মধ্যে প্রবল বর্ষণে পটুয়াখালী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ সেদিন প্রবল বর্ষণ শুরু হলাে। আকস্মিক বর্ষণে নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হতে লাগল । ফলে পটুয়াখালী এলাকায় বন্যার তাণ্ডবলীলা শুরু হয়েছে। হঠাৎ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উঠতি ফসলের । স্রোতের টানে পাকা ফসল ভেসে গেছে বিস্তীর্ণ । এলাকার ফসল ডুবে গেছে। ধান ছাড়াও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের ঘরে ঘরে হাহাকার শুরু হয়েছে।
বন্যার স্রোতে প্রায় ৮০ ভাগ কাঁচা ঘরবাড়ির ভিটা ভেঙে গেছে। বসতবাড়ি বাসের অযােগ্য হওয়ায় অসংখ্য লােক গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এলাকায় যে দুটি আশ্রয়কেন্দ্র আছে তাতে তােক সংকুলান হচ্ছে না। ইতােমধ্যে সরকার আরও কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলােতে মানুষ ঠাসাঠাসি অবস্থায় বাস করছে। সমগ্র এলাকার যােগাযােগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট ভেঙে গেছে। ওয়্যারলেস ও মােবাইল নেটওয়ার্কের টাওয়ার ভেঙে পড়ায় কেউই সহজে কোনাে খোঁজখবর আদানপ্রদান করতে পারছে না। ভেড়ি ভেঙে যাওয়ায় ভেড়ির পভতরের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়া গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ফলে এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি সৃষ্টি হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। এ দুর্যোগ মােকাবিলায় সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আজ আর নয় । তােমার পত্রের অপেক্ষায় শেষ করলাম।