তোমার কলেজে উদযাপিত একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি পত্র লেখ
✱ তোমার কলেজে উদযাপিত একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে/বান্ধবীকে একটি পত্র লেখ।
সেনবাগ, নােয়াখালী ।
২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
প্রিয় অর্ণব
আমার আন্তরিক প্রীতি ও বর্ণিল শুভেচ্ছা নিও। অনেকদিন তােমাকে চিঠি লিখিনি বলে অভিমান ভরা যে চিঠিটি তুমি লিখেছ, তা পেয়েছি। আর পেয়েই পত্র পাঠোত্তর তােমাকে লিখতে বসেছি। তুমি জানতে চেয়েছ— আমি এমন কী নিয়ে ব্যস্ত যে, তােমাকে চিঠি লেখার ফুসরত পাই না। সে অনেক কাজের ব্যস্ততা ভাই। কলেজে একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপন নিয়ে সম্প্রতি আমি ভীষণ ব্যস্ততার ভেতর দিয়ে কাটিয়েছি । অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিধায় তােমাকে আজ আমাদের কলেজে উদ্যাপিত একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাচ্ছি।
অমর একুশে তথা ভাষাশহিদ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আমাদের কলেজে গত ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়ােজন করা হয়েছিল। ভাের ছয়টায় প্রভাতফেরির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। মাননীয় অধ্যক্ষের নেতৃত্বে শহিদ মিনারে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এ সময় একুশের বিখ্যাত গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’ বিউগলে করুণ সুর বেজে উঠল । অধ্যক্ষ মহােদয়ের পুষ্প অর্পণের পর শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে পুষ্প অর্পণ করা হয়। এ সময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকে এবং কালাে পতাকা উত্তোলিত হয়। কালাে ব্যাজ পরে খালি পায়ে সমবেত সকলের মধ্যে তখন এক ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরে মহান ভাষা-আন্দোলনের শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। সকাল দশটায় কলেজ অডিটোরিয়ামে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি ও আমাদের সমাজ ভাবনা' শীর্ষক এক সেমিনারের আয়ােজন করা হয়। মাননীয় অধ্যক্ষ এতে সভাপতিত্ব করেন। প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মােয়াজ্জেম হোেসেন। বিকাল তিনটায় শুরু হয় | একুশের কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতানুষ্ঠান। এরপর দেশাত্মবােধক গানের আমেজে পুরাে অডিটোরিয়াম মেতে ওঠে। বেশ ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়েই এবার আমাদের কলেজে একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানমালা সম্পন্ন হয়। এই হলাে আমার ইদানীং ব্যস্ত থাকার | কৈফিয়ত। আশা রাখি, এরপর থেকে তােমাকে আর পত্র প্রেরণ বিলম্ব হেতু অভিমান করতে হবে না। ভালাে থেকো, সুস্থ থেকো। তােমার বাবা-মাকে আমার প্রণাম দিও। উত্তরের প্রতীক্ষায় রইলাম।