বাংলা রচনা : জাতীয় জীবনে বিজয় দিবসের তাৎপর্য
জাতীয় জীবনে বিজয় দিবসের তাৎপর্য |
বিজয় দিবস
অথবা, জাতীয় জীবনে বিজয় দিবসের তাৎপর্য
[সংকেত : সূচনা; পটভূমি; বিজয় দিবসের তাৎপর্য; বিজয় দিবস ও বর্তমান বাস্তবতা; বিজয় দিবস উদ্যাপন; মহান বিজয় দিবসের চাওয়া; উপসংহার । ]সূচনা : ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। এটি আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনে নতুন প্রেরণা ও শক্তি সঞ্চার করে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােষণা করেন। এই ঘােষণার পরই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১-এর এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় বিজয় অর্জিত হয়। এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় নতুন একটি রাষ্ট্র, যার নাম হয় বাংলাদেশ । তাই ‘বিজয় দিবস' আমাদের আত্মমর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক । বিজয় দিবস সম্পর্কে প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হােসেন বলেন, 'The Victory Day of the Libertion War brought hilly exuberance for the Bangalee which much be put into equipment.'
পটভূমি : বাংলাদেশের বিজয় দিবসের পটভূমিতে রয়েছে বিপুল ত্যাগ ও সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস। সে ইতিহাসের এক গৌরবময় মাইলফলক মহান ভাষা-আন্দোলন। এই আন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাসের মধ্য দিয়ে বাঙালির ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটে। পরে দীর্ঘ দুই দশক ধরে চলে পাকিস্তানি স্বৈরাচারী জঙ্গিবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম। এ পটভূমিতেই ১৯৭১এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘােষণা করেন স্বাধীনতা। পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বীর বাঙালি । শুরু হয় এদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা- মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে চলে মুক্তিসেনাদের সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। যুদ্ধে প্রায় ত্রিশ লক্ষ বাঙালি জীবন বিসর্জন দেয়। অবশেষে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির বিজয় সূচিত হয়। এই দিনে ঢাকায় ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সােহরাওয়ার্দী উদ্যানে) ঘটে ইতিহাসের অন্যতম গৌরবময় ঘটনা- পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মাথা নিচু করে অস্ত্র মাটিতে ফেলে আমাদের বীর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
বিজয় দিবসের তাৎপর্য : ত্রিশ লক্ষ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। অনেক অশ্রু বিসর্জনে পাওয়া এ স্বাধীনতা আমাদের কাছে অত্যন্ত গৌরবের । প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে নিয়ে চলেছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পতাকা, গাইছে বিজয়ের গৌরবগাথা। তাই বিজয় দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম [প্রতি বছর দিনটি পালনের মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মকে এবং বিশ্বকে বারবার মনে করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযােদ্ধাদের কথা, বীর শহিদদের কথা । আমরা অনুপ্রাণিত হই আমাদের দেশ ও জাতির গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাসের কথা স্মরণ করে । উদ্বুদ্ধ হই অগ্রগতির পথযাত্রায় এগিয়ে যেতে।
বিজয় দিবস ও বর্তমান বাস্তবতা : শােষণমুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হলেও আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবের আঘাতে আজ ছিন্নভিন্ন। দীর্ঘ সামরিক শাসনের কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনেক কিছুই এখন চলে গেছে আড়ালে।গণতন্ত্র এখন সংকটের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর্থনীতিক মুক্তি অর্জন এখন নানাভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শ বহুদিন ধরে উপেক্ষিত। আর মুক্তিযুদ্ধের সময় যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তা বিভেদ ও সংঘাতে পর্যবসিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে বিজয় দিবস এখনও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
বিজয় দিবস উদযাপন : প্রতি বছর ষােলােই ডিসেম্বর মহাসমারােহে বিজয় দিবস উদযাপিত হয়। এ দিন সারাদেশ ছেয়ে যায় লালসবুজের সাজে। বাড়ির ছাদে, দোকানে, গাড়ির সামনে, স্কুল-কলেজে, এমনকি রিকশার হ্যান্ডেলেও শােভা পায় লাল-সবুজ রঙের জাতীয় পতাকা। প্রতিটি শহরে পরিলক্ষিত হয় উৎসবের আমেজ। রাজধানী ঢাকার রাস্তায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গােষ্ঠী আয়ােজন করে গণমুখী নানা অনুষ্ঠানের। স্বাধীনতার আবেগে উদ্বেলিত নরনারী উৎসবের সাজে সেজে সেখানে জমায়েত হয়। স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীরা নানারকম অনুষ্ঠানের আয়ােজন করে। এই দিন সকালবেলা ঢাকার জাতীয় প্যারেড ময়দানে প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগে কুচকাওয়াজের আয়ােজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিবিদ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষ এই কুচকাওয়াজ উপভােগ করে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্যরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে এ দিন পুস্পার্ঘ অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ৭ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিজয় মেলার আয়ােজন করা হয়। চট্টগ্রাম এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই মেলা দেখতে আসে। দেশের প্রতিটি জেলায়ও উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি পালিত হয়।
মহান বিজয় দিবসের চাওয়া : ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। আর দিনটি স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় দিবস হিসেবে সাড়ম্বরে উদ্যাপন করা হয়। তবে আমাদের উচিত দিবসটিকে শুধু আক্ষরিক অর্থে পালন করা নয়, বরং স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে যে দায়িত্বগুলাে আমাদের ওপর অর্পিত হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা। যে স্বপ্নকে ঘিরে মুক্তিযােদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রত্যেককে কাজ করতে হবে। তবেই লাখাে শহিদের আত্মা শান্তি পাবে এবং গড়ে ওঠবে তাদের স্বপ্নের সােনার বাংলা।
উপসংহার : বিজয় দিবস বাঙালি জাতিসত্তার তথা সমগ্র বাংলাদেশিদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের । দিবসটি আনন্দের একটি দিন হলেও এর সাথে জড়িয়ে আছে ৭১-এর মহান শহিদদের স্মৃতি, স্বজন হারানাের আর্তনাদ আর যুদ্ধাহত ও ঘরহারা মানুষের দীর্ঘশ্বাস । এ দিনটি শুধু আমাদের বিজয়ের দিন নয়। এটি আমাদের চেতনার জাগরণের দিন। তাই এই দিনে প্রতিটি বাঙালি নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় দেশকে গড়তে- বিশ্বসভায় সামনের সারিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে।
বিজয় দিবস উদযাপন : প্রতি বছর ষােলােই ডিসেম্বর মহাসমারােহে বিজয় দিবস উদযাপিত হয়। এ দিন সারাদেশ ছেয়ে যায় লালসবুজের সাজে। বাড়ির ছাদে, দোকানে, গাড়ির সামনে, স্কুল-কলেজে, এমনকি রিকশার হ্যান্ডেলেও শােভা পায় লাল-সবুজ রঙের জাতীয় পতাকা। প্রতিটি শহরে পরিলক্ষিত হয় উৎসবের আমেজ। রাজধানী ঢাকার রাস্তায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গােষ্ঠী আয়ােজন করে গণমুখী নানা অনুষ্ঠানের। স্বাধীনতার আবেগে উদ্বেলিত নরনারী উৎসবের সাজে সেজে সেখানে জমায়েত হয়। স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীরা নানারকম অনুষ্ঠানের আয়ােজন করে। এই দিন সকালবেলা ঢাকার জাতীয় প্যারেড ময়দানে প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগে কুচকাওয়াজের আয়ােজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিবিদ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষ এই কুচকাওয়াজ উপভােগ করে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্যরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে এ দিন পুস্পার্ঘ অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ৭ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিজয় মেলার আয়ােজন করা হয়। চট্টগ্রাম এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই মেলা দেখতে আসে। দেশের প্রতিটি জেলায়ও উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি পালিত হয়।
মহান বিজয় দিবসের চাওয়া : ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযােদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। আর দিনটি স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় দিবস হিসেবে সাড়ম্বরে উদ্যাপন করা হয়। তবে আমাদের উচিত দিবসটিকে শুধু আক্ষরিক অর্থে পালন করা নয়, বরং স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে যে দায়িত্বগুলাে আমাদের ওপর অর্পিত হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা। যে স্বপ্নকে ঘিরে মুক্তিযােদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রত্যেককে কাজ করতে হবে। তবেই লাখাে শহিদের আত্মা শান্তি পাবে এবং গড়ে ওঠবে তাদের স্বপ্নের সােনার বাংলা।
উপসংহার : বিজয় দিবস বাঙালি জাতিসত্তার তথা সমগ্র বাংলাদেশিদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের । দিবসটি আনন্দের একটি দিন হলেও এর সাথে জড়িয়ে আছে ৭১-এর মহান শহিদদের স্মৃতি, স্বজন হারানাের আর্তনাদ আর যুদ্ধাহত ও ঘরহারা মানুষের দীর্ঘশ্বাস । এ দিনটি শুধু আমাদের বিজয়ের দিন নয়। এটি আমাদের চেতনার জাগরণের দিন। তাই এই দিনে প্রতিটি বাঙালি নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় দেশকে গড়তে- বিশ্বসভায় সামনের সারিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে।
ইনশাআল্লাহ 😇😇
খুব ভালো 👍👍