অনুচ্ছেদ রচনা : রূপসী বাংলাদেশ

অনুচ্ছেদ রচনা : রূপসী বাংলাদেশ
অনুচ্ছেদ রচনা : রূপসী বাংলাদেশ 

রূপসী বাংলাদেশ 

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভূষিত এক অনন্য দেশ। এদেশের প্রকৃতির রূপ সুষমা আমাদের নয়ন-মনে স্বর্গীয় প্রশান্তির শিহরন জাগায় । চারদিকে সবুজ বন-বনানী, উদার উন্মুক্ত নীলাকাশ, বয়ে চলা অসংখ্য নদ-নদী, জলে-স্থলে ফুটে থাকা ফুলের বাহার, সবুজ শস্যের দোলা এদেশকে রূপে রূপে অপরূপা করে তুলেছে। বাংলাদেশের রূপের রহস্য লুকিয়ে আছে এর ঋতু-বৈচিত্র্যের মধ্যে। বারাে মাসে পালাক্রমে ছয়টি ঋতু এসে এদেশকে মনের মতাে করে সাজায়। কখনাে রােদ, কখনাে বৃষ্টি, কখনাে গরম, কখনাে শীত নব নব রূপের বিচিত্র পটভূমি তৈরি করে। গ্রীষ্মের ফল-ফলাদি, বর্ষার বারিধারা, শরতের শুভ্র নীলাকাশে সাদা মেঘের আড়ালে চাঁদসূর্যের লুকোচুরি, হেমন্তের সােনালি পাকা ধান, শীতের শুভ্র কুয়াশা ও বসন্তের ফুলের হাসি বাংলাদেশকে রূপসি বাংলায় পরিণত করেছে। এদেশে বিচিত্র রূপের খেলা চলে বারাে মাস। পাহাড়, নদী, ঝরনাধারা, খাল-বিলগুলাে একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। ফসলের মাঠে, গাছের শাখায়, রাতের আকাশে, দিনের আলােয় বাংলাদেশ নানা রূপে নানাভাবে সেজে ওঠে। দিনে-রাতে, সকালে-বিকালেও এদেশের একেক রকম সাজ। সন্ধ্যার আলাে-আঁধারি পরিবেশে বঙ্গ-জননী শান্তির আঁচল বিছিয়ে দেয়। পাখিরা ডানা মেলে উড়ে উড়ে নীড়ে ফিরে আসে। কখনাে চাঁদের হাসি আবার কখনাে তারার ঝিকিমিকি রাতের আকাশকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত করে । ঝােপে-ঝাড়ে জোনাকিরা মিটিমিটি আলাে জ্বেলে অন্ধকারের বুকে রূপের আল্পনা আঁকে। বাংলাদেশের এমন রূপের পসরা আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ তাই এদেশের রূপে বিভাের হয়ে দেশটিকে ‘রূপসি বাংলা বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Monzurul
    Monzurul ডিসেম্বর ২২, ২০২০

    তথ্যপূর্ণ পোস্টের জন্য ধন্যবাদ

Add Comment
comment url