বৃষ্টির দিনে একজন কলেজ ছাত্রের দুর্ভোগের ঘটনা নিয়ে একটি দিনলিপি লেখ
বৃষ্টির দিনে একজন কলেজ ছাত্রের দুর্ভোগের ঘটনা নিয়ে একটি দিনলিপি লেখ |
বৃষ্টির দিনে একজন কলেজ ছাত্রের দুর্ভোগের ঘটনা নিয়ে একটি দিনলিপি লেখ।
বৃষ্টির দিনে কলেজ
৫ এপ্রিল ২০১৭,মঙ্গলবার
ভােরবেলা থেকে বৃষ্টি শুরু হলাে । সকালের ঘুম আর ভাঙছিল না। এদিকে মা ডাকাডাকি করছে । ঘুমের ঘােরে শুনতে পেলাম, “তাড়াতাড়ি ওঠ, পরীক্ষা দিতে যাবি না?’ ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বেলা সাড়ে আটটা বাজে । চিন্তা শুরু হলাে, কখন রেডি হব? কখন নাশতা খাব এবং কখন পরীক্ষার হলে পৌছাৰ। এই দিন ছিল আমার বাংলা ক্লাসটেস্ট । আমার বাসা। আজিমপুর থেকে রিকশায় মতিঝিল নটরডেম কলেজে যেতে ন্যূনতম ৩০ মিনিট সময়ের প্রয়ােজন। তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে উঠলাম । দ্রুত রেডি হয়ে বের হব । মা নাশতা খেয়ে যেতে জোরাজুরি করলেন। অগত্যা নাশতার টেবিলে তারপর বাইরে এসে দেখলাম তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। কোনাে রিকশাও আশেপাশে দেখলাম না। হঠাৎ একটি রিকশার দেখা পেলাম কিন্তু রিকশাওয়ালা ৫০ টাকার ভাড়া চাইল ১৫০ টাকা। অগত্যা রাজি হয়ে রিকশায় চড়ে বসলাম । রিকশাওয়ালার ছােটো। পলিথিন দিয়ে নিজেকে ঢাকার চেষ্টা করলাম কিন্তু কলেজে পৌছাতে পৌছাতে ভিজে জবুথবু হয়ে গেলাম । পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পর আমি হলে প্রবেশ করলাম । আমার অবস্থা দেখে স্যার আমাকে পরীক্ষা দিতে বাধা দিলেন না । প্রশ্ন হাতে পেয়ে দেখলাম প্রশ্ন সহজ হয়েছে। আমি প্রায় সবগুলাে প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারব। কিন্তু ঐ সময়ের মধ্যে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। অবশেষে অল্প কিছু প্রশ্নের উত্তর বাকি রেখে পরীক্ষা শেষ করলাম। পরীক্ষার পর এক ঘণ্টা বিরতি শেষে ইংরেজি ক্লাস। ততক্ষণে বৃষ্টি থেমে গেছে। এই এক ঘণ্টা সময় বন্ধুদের সাথে আডডা দিয়েই কাটালাম। আডডা দিতে দিতে কখন যে ক্লাসের সময় এসে পড়ল বুঝতে পারিনি। অবশেষে ১৫ মিনিট দেরি করে ক্লাসে ঢুকতে গেলাম । স্যার ছিলেন প্রচণ্ড নিয়মতান্ত্রিক। দেরি করে ক্লাসে আসার কারণে স্যার আমাদের আরও ১০ মিনিট বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখলেন এবং এরপর আমরা ক্লাসে ঢুকলাম। স্যার সনেট খুব চমক্কার পড়ান । সেদিনও স্যারের সনেট পড়ানাে উপভােগ করলাম দারুণ। ক্লাস শেষ হলাে। বাসার উদ্দেশে পা বাড়ালাম । কলেজ গেটে যেতে না যেতেই শুরু হলাে প্রচণ্ড বৃষ্টি । প্রকৃতি যেন তাড়া করছে পিছন থেকে। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসে উঠলাম। বাস থেকে নেমে রিকশায় করে বাসায় পৌছে দেখি জামা-প্যান্ট ভিজে আবারও জবুথবু।