বাংলা রচনা : দেশপ্রেম/স্বদেশপ্রেম

দেশপ্রেম/স্বদেশপ্রেম
দেশপ্রেম / স্বদেশপ্রেম

দেশপ্রেম
অথবা, স্বদেশপ্রেম

[ সংকেত : ভূমিকা; স্বদেশপ্রেমের স্বরূপ; স্বদেশপ্রেমের প্রকারভেদ; স্বদেশপ্রেমের অভিব্যক্তি; স্বদেশপ্রেম ও আমাদের করণীয়; স্বদেশপ্রেম ও রাজনীতি; স্বদেশপ্রেমের উপায়; আদর্শ দেশপ্রেমিক; স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম; উপসংহার । ]

ভূমিকা :
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে
সার্থক জনম, মাগাে, তােমায় ভালােবেসে ।

সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায়, 'ঈশ্বরে ভক্তি ভিন্ন দেশপ্রীতি সর্বাপেক্ষা গুরুতর ধর্ম।'

সংস্কৃত-শ্লোকে আছে, জননী জন্মভূমিশ্চঃ স্বর্গাদপি গরীয়সী। বস্তুত নিজের দেশকে ভালােবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। হৃদয়ের গভীর থেকে অকৃত্রিম অনুরাগে নিজের দেশ, দেশের মাটি এবং দেশের মানুষকে ভালােবাসাই হলাে দেশপ্রেম। দেশপ্রেম মানুষের উত্তরাধিকার রূপে প্রাপ্ত স্বভাবজাত এক মহৎ গুণ। বৃহত্তর অর্থে মানুষ ধরিত্রীর সন্তান। এই বিশাল পথিবীর যে ভুখণ্ডে যে মানুষ জন্ম নেয়, সেদেশের আলাে-বাতাস-ধূলিকণায় তার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, যে রাষ্ট্রের ধর্ম-ভাষা-সংস্কৃতিতে তার একাত হওয়ার আকুতি সেই দেশই হলাে তার স্বদেশ। আর সেই দেশের প্রতি মমত্ববােধই হলাে তার স্বদেশপ্রেম। একজন প্রকত দেশপ্রেমিক নিঃস্বার্থভাবে তার স্বদেশকে ভালােবাসে এবং জীবনান্তে তার প্রত্যাশা দেশপ্রেমিক কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অভিব্যক্তিতেই যেন প্রতিধ্বনিত হয়ে ওঠে—

ও মা তােমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি
আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতেই মরি। 

স্বদেশপ্রেমের স্বরূপ : যেকোনাে মানুষ স্বদেশের মাটি, স্বদেশের জল, আকাশ-বাতাস, পরিবেশ মানষ কটি ৪ সহকচর মধ্যে শিশুকাল থেকেই মায়ের আদরে পুষ্ট হতে থাকে। স্বদেশের সঙ্গেই গড়ে ওঠে তার নাড়ির সম্পর্ক। তার দেহ-মন, বিশ্বাস-আদর্শ। সবকিছুই স্বদেশের বিভিন্ন উপাদান দ্বারা পুষ্ট হয়। ফলে স্বদেশের প্রতি তার যে ভালােবাসা সৃষ্টি হয় তা অকত্ৰিম কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ এবং কর্তব্য ও দায়িত্বের অনিবার্য দায়বদ্ধতা। বস্তুত মা, মাটি ও মানুষকে ভালােবাসার নিহিত। সে কারণে, স্বদেশের ভাষা-সাহিত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ-সংস্কৃতি এবং জীবন ও পরিবেশের সঙ্গে একজন দেশপ্রেমিক মানষের যেমন শেকডের বন্ধন গড়ে ওঠে, তেমিন মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার প্রতি সৃষ্টি হয় তার চিরায়ত জানার এই আবেগময় প্রকাশই হচ্ছে দেশপ্রেম। শুধু মুখে মুখে ভালােবাসার কথা বললেই তাকে দেশপ্রেমিক বলা যায় না। নাগরিকের চিন্তায়, কথায় ও কাজে দেশের জন্য যে ভালােবাসা এবং দেশের মঙ্গল করার প্রচেষ্টা প্রকাশ পায় সেটাই প্রকৃত দেশপ্রেম ।


স্বদেশপ্রেমের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে : আত্মত্যাগ, বীরত্ব, সরলতা, শর্তহীনতা, কৃতজ্ঞতা, দায়িত্ব, কর্তব্য ও একাত্মবােধ। কবি সমুদ্র গুপ্তের ভাষায়—

"স্বদেশপ্রেম থেকে বিশ্বপ্রেম। যে নিজের দেশকে ভালােবাসে, সে বিশ্বপ্রেমিক, মানব-প্রেমিক মানবতাবাদী।"

স্বদেশপ্রেমের প্রকারভেদ : দেশপ্রেম শুধু দেশকে ভালােবাসার মধ্যেই সীমিত নয়। পাশ্চাত্যের উন্নত জাতিগুলাে দেশকে স্থান দিয়েছে সবার উপরে। দেশের জন্য সর্বস্ব ত্যাগের দৃষ্টান্ত পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি জাতির মধ্যেই রয়েছে। দেশপ্রেমিক মানুষেরা দেশের বিপদে-আপদে, সংকটে-দুর্যোগে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাপিয়ে পড়ে দেশের সেবা করেন। দেশের অসম্মান, দেশের অপমান, মাকে অপমান আর অসম্মান করারই শামিল। তাই যারা দেশকে অপমান করে, অসম্মান করে তাদের মনে-প্রাণে সবারই ঘৃণা করা উচিত। দেশপ্রেমই জাতীয়তার উৎস। 

স্বদেশপ্রেমের অভিব্যক্তি : গর্ভধারিণী জননীকে সন্তান যেমন ভালােবাসে তেমনি দেশ মাতৃকাকেও মানুষ জন্মলগ্ন থেকেই শ্রদ্ধা। করতে এবং ভালােবাসতে শেখে। বলা যায়, এই ভালােবাসা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, প্রাকতিকভাবে ব্যক্তি মানুষের হৃদয়ে আপনাআপনি সৃষ্টি হয়। নিজের দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি ব্যক্তির যে বন্ধন ও আকর্ষণ তা থেকেই স্বদেশপ্রেমের জন্ম । দেশ যত ক্ষুদ্র। বা যত দরিদ্রই হােক না কেন, প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের কাছে তার জন্মভূমি, তার দেশ সবার সেরা। স্বদেশের প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে। যেকোনাে ব্যক্তি তার ধন, জন, মান, এমনকি জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করতে দ্বিধা করে না। দেশে যখন সংকট উপস্থিত হয় যখন বহিঃশত্রুর আক্রমণে দেশের স্বাধীনতা বিপর্যস্ত হয়, যখন দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তােলার প্রয়ােজন হয় তখনই। আসে মানুষের স্বদেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষা। তখন দেশাত্মবােধ শ্রেণি, ধর্ম-বর্ণ-গােত্র সব ভুলে একই ভাবচেতনায় দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ। করে। স্বদেশপ্রেম তখন মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। দেশের মর্যাদার জন্য মানুষ অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দেয় । স্বদেশপ্রেম অকৃপণ উদার এবং খাটি। স্বদেশপ্রেমের অভিব্যক্তি অ্যাডউইন আর্নল্ডের ভাষায় চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি বলেছেন, জীবনকে ভালােবাসি সত্য, কিন্তু দেশের চেয়ে বেশি নয়। 

স্বদেশপ্রেম ও আমাদের করণীয় : ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির সাথে একই সুতায় গাঁথা দেশপ্রেমের আকুলতা। বিভিন্ন দেশে। বিভিন্ন জাতিতে দেশপ্রেমের রূপ ভিন্ন । কিন্তু প্রকৃতি একই রকম। স্বদেশপ্রেম প্রতিটি মানুষের হৃদয়কেই কাদায়। মহাকবি মাইকেল এর ভাষায় বলতে হয়—

বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে? 

উইলিয়াম ওয়াটসন বলেছেন, 'সত্যিকার দেশপ্রেমিক তারা, যারা দেশকে দলের গণ্ডিতে আবদ্ধ করে না। আমাদের জাতীয় জীবনে দেশপ্রেমের চেতনাকে জাগিয়ে রাখতে হবে উজ্জ্বল শিখার মতাে। অকৃত্রিম দেশপ্রেমই জাতিকে উপহার দিয়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই আমরা অর্জন করেছি। আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের ইতিহাস ত্যাগের ইতিহাস। যেকোনাে মূল্যে আমরা দেশের স্বাধীনতা ও ভাষার মর্যাদা রক্ষা করব । বিনিময়ে আমাদের রক্ত দিতে হয় দেব, আমরা প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের একটি কবিতার দুটি লাইন মনে পড়ে—

'মনে মনে স্থির ভাবে কর প্রণিধান।
যাহাতে দেশের হয় কুশল বিধান ॥ 

স্বদেশপ্রেম ও রাজনীতি : পলাশির যুদ্ধে পরাজয়ের পর দু’শ বছর ব্রিটিশ শাসন, ২৪ বছর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শাসনের নাগপাশ থেকে আমাদের মুক্তি মেলে একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী আমাদের রয়েছে। আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত । দেশপ্রেমিক বীরদের প্রাণ উৎসর্গের সেই মহিমান্বিত ইতিহাস আমরা আজও স্মরণ করি । যারা দেশকে ভালােবাসেন তারা দেশের জন্য প্রাণ দেন। জীবনের ভােগ-বিলাস, আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে দেশের সেবায় নিয়ােজিত হন । দেশের উন্নয়নে তাঁরা মেধাকে কাজে লাগান। সর্বস্তরের মানুষ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, আইনজীবী, বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক, কৃষক, শ্রমিক, মুটে, মজুর সবাই নিজ নিজ প্রচেষ্টায় দেশের সমৃদ্ধি আরও বাড়াতে পারেন। শুধু রাজনীতিবিদরাই দেশপ্রেমিক বা দেশসেবক তা নয়। দেশপ্রেমিক না হলে খাটি নাগরিক হওয়া যায় না। রাজনীতিবিদদের অনেকেই ক্ষমতা দখলের নির্লজ্জ লােলুপতায় মেতে দেশপ্রেমের নামাবলি গায়ে দিয়ে দেশপ্রেমিকের ছদ্মবেশ ধরেন। হিটলার বা মুসােলিনীকে আমরা দেশপ্রেমিক বলি না। কারণ এরা ক্ষমতালােভী। এরা এবং এদের উত্তরসূরিরাই বিশ্বশান্তি নষ্ট করে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সমসাময়িক কালের পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট রাজনীতিক তথা রাষ্ট্রনায়ক। সে নিজ দেশে এবং পর দেশে চরম অশান্তির আগুন জ্বালিয়েছে নরপিশাচের মতাে। তার কারণে আমেরিকার অনেক তরুণ সৈনিক অন্য দেশে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। ফলে বুশ নিজ দেশের যেমন মানব শত্রু হিসেবে নিন্দিত তেমনি সারা বিশ্ববাসীর কাছেও। 

স্বদেশপ্রেমের উপায় : কবির ভাষায়—

‘স্বদেশের উপকারে নেই যার মন
কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন। 

পৃথিবীতে এমন কোনাে ধর্ম নেই, যে ধর্মে দেশকে ভালােবাসার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মত্যাগকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। মানুষ জীবনে যেকোনাে সময়ে যেকোনাে স্থান থেকে দেশকে ভালােবাসতে পারে। নিজ জাতির জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তা সে ছােটো কাজই হােক বা বড়াে প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু করার আছে। কৃষক কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে পারে। তেমনি সাহিত্যিক তার সাহিত্যসাধনার মাধ্যমে দেশের মানুষের জ্ঞান বিস্তার করে দেশের প্রতি ভালােবাসা জ্ঞাপন করতে পারেন। দেশের কল্যাণে ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখে। বিশ্বসভ্যতায় অবদান রেখে দেশের গৌরব বাড়ানাে যায় । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জগদীশচন্দ্র বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ। মুজিবুর রহমান প্রমুখের অবদানে বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। 

আদর্শ দেশপ্রেমিক : পৃথিবীতে যুগে যুগে বহু দেশপ্রেমিক জনালাভ করেছেন। তাঁরা নিজেদের মেধা, শ্রম ও কর্ম দিয়ে পৃথিবীকে। সুন্দর করে সাজিয়েছেন। তাঁদের হাতেই সৃষ্টি হয়েছে সভ্যতা, আধুনিক সমাজ বা রাষ্ট্র, অ্যারিস্টটল, মহামতি লেনিন, জর্জ ওয়াশিংটন, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্শাল টিটো, ইয়াসির আরাফাত, মাহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। 
স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় স্বদেশপ্রেমের অমর বাণী উচ্চারিত হয়েছে বারবার। তাদের দেশপ্রেম বিশ্বপ্রেমে রূপ নিয়েছে। দেশপ্রেমিক না হলে বিশ্বপ্রেমিক হওয়া যায় না। স্বামী বিবেকানন্দ দেশকে ভালােবেসেছিলেন বলেই বিশ্বপ্রেমের অমর বাণী প্রচার করেছেন। দেশকে ভালােবাসা মানে দেশের মানুষকে ভালােবাসা। দেশের মানুষকে ভালােবাসলে পৃথিবীর সকল মানুষকে ভালােবাসা যায়। মাদার তেরেসা, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, রেডক্রসের প্রতিষ্ঠাতা হেনরি ডুনান্ট প্রমুখ বিশ্ব মানবসেবীদের নামও স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। উপসংহার : কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়—

স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে ।
কে বাঁচিতে চায়
দাসত্বশৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে
কে পরিবে পায় । 

পৃথিবীতে বীর, বিপ্লবী, ত্যাগী মহৎ দেশপ্রেমিক মানুষেরা তাদের বীরত্ব ও ত্যাগের মহান আদর্শ রেখে গেছেন। স্বদেশপ্রেমের। শক্তিতেই তারা পৃথিবীকে করতে চেয়েছেন সুন্দর, কল্যাণকর ও শান্তিময়। মূলত দেশপ্রেম মানবজীবনের একটি শ্রেষ্ঠ গুণ এবং অমূল্য সম্পদ। একটি মহৎগুণ হিসেবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই দেশপ্রেম থাকা উচিত । দেশপ্রেমের মূল লক্ষ্য মানুষকে ভালােবাসা । তাই দেশপ্রেম বিশ্বপ্রেমেরই অংশ বিশেষ। ব্যক্তিস্বার্থকে ত্যাগ করে সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে ভালােবাসাই দেশপ্রেম। আর দেশের উর্ধ্বে সমগ্র পৃথিবীকে ভালােবাসাই বিশ্বপ্রেম। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার চরণ দুটি প্রণিধানযােগ্য—

ও আমার দেশের মাটি, তােমার পরে ঠেকাই মাথা।
তােমাতে বিশ্বময়ীর তােমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা । 

পরিশেষে বলা যায়, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কিছু না কিছু অবদান রাখা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেননা, আমরা জানি—

নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url